Search

সিলেটে হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা

দেশে আগের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে ডেঙ্গু। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা এবারই সব থেকে বেশি। সিলেটে এখন পর্যন্ত কেউ মারা না গেলেও গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন আড়াই শতাধিক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন- চলতি আগস্ট ও আগামী সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সিলেট জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সিলেটে চলতি বছর ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৬৫।

জেলায় গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) নতুন করে ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এসব রোগীর মধ্যে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আটজন, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন, নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন এবং জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন চিকিৎসাধীন।

আর বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এদিকে, চলতি আগস্ট ও আগামী সেপ্টেম্বরে সারা দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব আরও বেড়ে যাবে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী।

তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন- এ বছর ডেঙ্গুর যে প্রকার দেখা যাচ্ছে, সেগুলো সেকেন্ডারি ফর্মের। অর্থাৎ আগে যিনি ডেঙ্গুর অন্য কোনো উপধরণ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি এখন আরেকটি ধরণ বা উপধরণ দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার যখন কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় তখন মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এবারে তাই হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যেভাবেই হোক বর্তমানে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণগুলো বেশ বদলে গিয়েছে। এই বদলে যাওয়া ধরণগুলো দেখে এটা যে ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে, সেটা প্রথমে অনেকে বুঝতে পারে না। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে দেরি হয়ে যায়। যেহেতু ২ বা ৩ দিন বুঝতেই পারে না তাই যখন কোরো রোগী হাসপাতালে যান তখন তার ডিহাইড্রেশন ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়।

বর্তমানে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা দিনে এবং রাতেও কামড় দেয়। এছাড়াও ডেঙ্গু এখন শুধু পরিষ্কার পানিতে নয় যেকোনো পানিতেই জন্মাতে পারে। ডেঙ্গু রোগের লক্ষণও বদলে গিয়েছে, উপসর্গেও পরিবর্তন এসেছে। সবমিলিয়েই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে আমরা যদি সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হই তাহলে চলতি বছরে হয়তো ডেঙ্গুর নথিভুক্ত মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি হবে এবং সেটা কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে।

ডাক্তার লেলিন চৌধুরী আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া ডেঙ্গুতে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সরকারি যে হিসাব তাতে সব মৃত্যু ও আক্রান্তের হিসাব যুক্ত থাকছে বিষয়টি তেমন না। এটি যদি আমরা স্যাম্পল হিসেবে ধরে নিই তাহলে অনুমান করতে পারি সারাদেশে কী পরিমাণ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন ও মারা যাচ্ছেন। আমাদের মনে হচ্ছে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আরও বেড়ে যাবে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলো প্রায় পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। যদি ডেঙ্গু সংক্রমণের গতি আরেকটু বেড়ে যায়, তাহলে কিন্তু হাসপাতালে জায়গা দেওয়া সম্ভব হবে না। অতএব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাগুলো যদি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে সকলেরই সমূহ ক্ষতি হবে।

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত