নিজস্ব প্রতিবেদক :: মরমি কবি ও সংগীতসাধক হাছন রাজার পৈতৃক নিবাস সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা জমিদার বাড়িতে এ বছরই প্রথমবারের মতো হাছন রাজা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে স্মরণোৎসব করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে ‘হাছন রাজা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, প্রখ্যাত চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জহিরুল ইসলাম অচিনপুরীর নেতৃত্বে স্মরণোৎসবের মাঠ পরিদর্শন করা হয়।
পরে সংবাদকর্মী ও স্থানীয় এলাকাবাসীদের সাথে মতবিনিময়কালে ডা. জহিরুল ইসলাম অচিনপুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন জমিদারি প্রথা ছিল, দেশের অনেক জমিদারের থেকেও হাছন রাজা আলাদা ছিলেন। তিনি সৌখিন জমিদার ছিলেন। তিনি ঘোড়া ও কুড়াসহ নানান প্রজাতির পশু-পাখি লালনপালন করতেন। তাঁর জমিদারি জৌলুস থাকলে তিনি ভাবের জগতে বিচরণ করার কারণে তাঁর কাছে মনে হল এ জগত সংসারের প্রয়োজন নাই, মানুষ একদিন চলে যেতে হবে। তিনিও একদিন চলে যাবেন। তাই তিনি ভাবের জগতে চলে যান এবং তিনি মনে করেন এই জগতে সকল বাহাদুরি সবই অর্থহীন। আমাদের সবাইকে আখেরাতের দিকে চলে যেতে হবে। এই ভাব যখন তাঁর কাছে চলে আসে, তিনি এই জৌলুস আর চাকচিক্যের মধ্যে থাকেন নাই। আমরা তাকে জমিদার হিসাবে বেশি প্রচার করে ফেলেছি। কিন্তু হাছন রাজার যে মরমি দর্শন, সুফিবাদী দর্শন-এটা নিয়ে আমরা কাজ করি নাই। হাছন রাজা যে একজন সুফি ছিলেন, তিনি যে একজন দরবেশ ছিলেন, এভাবে হাছন রাজাকে পরিচয় করিনি জগৎবাসির কাছে। আমরা বিশ্বনাথবাসী এজন্য ভুল বুঝেছি। আমাদেরকে সংশোধনের সময় এসেছে। আমাদের সবাইকে হাছন রাজাসহ মরমী সাধকদের দর্শন ধারণ ও চর্চা করে প্রথমে নিজেদেরকে গড়তে হবে। তাহলেই এ দর্শন দেশ ও সামজে ছড়িয়ে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে রামপাশায় যে বাড়ি দেখছেন সেটাও তিনি তৈরি করেননি। এই ঘর তাঁর ছেলে দেওয়ান একলিমুর রাজা চৌধুরী তৈরি করেছেন। তাঁর সময়কাল কোন পাকা ঘর ছিল না। তিনি কোনো দালান কোটা বানান নাই। পরকালের কথা চিন্তা করে আর মহান রব, পরম সত্ত্বা আল্লাহর শক্তিকে ধারণ করে-রাসুলের দর্শন ও সুফিবাদী দর্শন নিয়ে কাজ করেছেন হাছন রাজা। তার প্রতিটা গানের ভেতরে এসকল সুফিবাদী দর্শন, পরম সত্ত্বার দর্শন রয়েছে।’
মাঠ পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসন রাজা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা সাহাবাজ রাজা চৌধুরী, শামীম রেজা চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আসাদুজ্জামান নুর আসাদ, সাধারণ সম্পাদক সোলেমান হোসেন চুন্নু, যুগ্ম সম্পাদক সেলিম মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক দিলওয়ার হোসেন শিপলু, প্রচার সম্পাদক শাহান উদ্দিন নাজু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রাসেল, সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এম এজাজুল হক এজাজ, সদস্য আব্দুল মনাফ, বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্বাস হোসেন ইমরান, বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ নুর উদ্দিন, বিশ্বনাথ মডেল প্রেস ক্লাবের সদস্য সালেহ আহমদ সাকী ও বদরুল ইসলাম মহসিন।













