নিজস্ব প্রতিবেদক :: স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা, পৌর ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি। গতকাল বিকেলে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার রশিদপুর মামণি কমিউনিটি সেন্টারে ওই দুই উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দিন।
বক্তব্যে বলা হয়, ‘সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিছবাহ’র স্বাক্ষর জাল করে এবং জাল সীল ব্যবহার করে দক্ষিণ সুরমা থানায় দায়ের করা একটি মামলার কিছু আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের উদ্দেশ্যে একটি চিঠির বরাত দিয়ে দৈনিক সমকাল পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে সংবাদ প্রচার করা হয়। এটি আমাদের নজরে আসার পর গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে দক্ষিণ সুরমা থানায় আমাদের নিজেদের স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে ওই চিঠি আমাদের নয় বলে থানা পুলিশকে অবহিত করেছি। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার (২৬ জুলাই) ওসমানীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও (যার নাম্বার ১২৪৭) করা হয়েছে। এছাড়াও, ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান আহমদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের ঘটনায়ও রায়হান আহমদ নিজে ওসমানীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন (যার নাম্বার ৯৭৪, তারিখ ১৯.০৭.২০২৫)।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘দক্ষিণ সুরমা থানায় জাল সীল-স্বাক্ষরে দাখিল করা ওই চিঠির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৪ জুলাই জাতীয় দৈনিক সমকাল পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ‘মামলা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাদ দিতে উপজেলা বিএনপির চিঠি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। আমরা কোন সাংবাদিককে এ ধরণের কোনো বক্তব্য প্রদান করিনি। সাধারণতঃ প্রতিটি পত্রিকারই উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি রয়েছেন। কিন্তু, সম্প্রতি যে বিতর্কিত সংবাদটি প্রস্তুত ও প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি ওই পত্রিকার ঢাকা অফিস থেকে করা হয়েছে, যা রহস্যজনক। পত্রিকার কর্তৃপক্ষ স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সংবাদ প্রস্তুত করলে এ ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হতো না বলে আমরা মনে করি। আমরা আরও মনে করি, সিলেট-২ আসনে বিএনপির দৃঢ় ভিত্তি ও সাংগঠনিক ঐক্যকে বিনষ্ট করার সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সম্প্রতি এই সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে। ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ বিএনপির সাংগঠনিক অগ্রগতি ও ঐক্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রিমহল দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে উঠেপড়ে লেগেছে। তারই অংশ হিসেবে এমন কাজ করে যাচ্ছে স্বার্থান্বেষী মহল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও গণমাধ্যমে তারা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রী নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এরা বিভ্রান্তিকর তথ্য ও সংবাদ পরিবেশন করে চলেছে। প্রকাশিত সংবাদে সাধারণ সম্পাদকের যে বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে ‘এরা সবাই বিএনপির সমর্থক, তারা একটি কমিটি গঠন করে তাদের চিহ্নিত করেছেন। যেহেতু তারা বিএনপির লোক, তাদের মামলা থেকে রেহাই দেয়ার জন্য ওই চিঠি থানা পুলিশকে দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, এ ধরণের কোনো বক্তব্য প্রদান করা হয়নি। প্রতিবেদক মুঠোফোনে কথা বললে প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে বলা হয়েছে, থানায় দেয়া যে চিঠির কথা বলা হয়েছে, তা আমরা দেইনি। কে বা কারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে জাল স্বাক্ষর ও সীল ব্যবহার করে থানায় এ ধরণের চিঠি দিয়েছে এবং এ ব্যাপারে আমরা দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশকে লিখিত ও মৌখিকভাবে অবগত করেছি।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের প্রিয় নেতা এম. ইলিয়াস আলীর সাজানো বাগান ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ বিএনপি। এই সাজানো বাগানকে বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্রকারী-অপ্রচারকারী একটি মহল বিভিন্ন মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর মন্তব্য ও বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। দেশবাসী ও এ অঞ্চলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও জনসাধারণকে এসব অপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে বিগত দিনের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থেকে দলীয় সকল কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান রইল। ইতোমধ্যে, ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নাম ব্যবহার করে জড়ো হওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে এবং নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এরা ইতোপূর্বে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের তল্পিবাহক হিসেবে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং সংগঠন বিরোধী কাজে লিপ্ত ছিল। আওয়ামী লীগের দালালী করে বিগত ১৫ বছর এরা ব্যবসা-বাণিজ্য করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। দলের প্রতি এদের কোনোরুপ কমিটমেন্ট ছিল না। দলের দুঃসময়ে এরা নিজেদের নিরাপদে রেখেছিল। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য আমরা দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। এসব সুবিধাবাদীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও বিএনপির নীতি নির্ধারকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। সেই সাথে আমাদের প্রিয় নেতা সিলেট-২ আসনের সাবেক সফল সংসদ সদস্য জননেতা এম. ইলিয়াস আলী বিগত ১৩ বছর যাবৎ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের গুম নামক কারাগারে বন্দী রয়েছেন। আমরা এখনো তাঁর কোনো খোঁজ পাইনি। অন্তবর্তী সরকারের কাছে আপনাদের মাধ্যমে তাকে খুঁজে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) গৌছ আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাই, ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ মিছবাহ, বিশ্বনাথ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) সামছুল ইসলাম, বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোনায়েম খান, জামাল আহমদ, শামিম আহমদ, আসাদুজ্জামান নুর আসাদ, ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কয়েছ আহমদ চৌধুরী, বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমাদ উদ্দিন খান চেয়ারম্যান, আব্দুল মুমিন মামুন, ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ রায়হান আহমদ, আব্দুল জমির, বিশ্বনাথ পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোবিন্দ মালাকার, ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক কবির আহমদ, দপ্তর সম্পাদক এমাদ উদ্দিন লিলু, সহপ্রচার সম্পাদক ফজর আলী, বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হাসান মাহমুদ রিপন, অর্থ সম্পাদক রিপন মিয়া, সহক্রিড়া সম্পাদক কাওছার আহমদ তুলাই, সদস্য জসিম উদ্দিন জুনেদ, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামছুল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন, বাবুল মিয়া, সদস্য সৌরভ আহমদ লাকি, শিহাব উদ্দিন, পৌর যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান রানা, পৌর স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব আহমেদ দুলাল মিয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক, উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক সুমন আহমদ, পৌর কৃষক দলের আহ্বায়ক নূর আলী, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হোসাইন আহমদ প্রবেল, সদস্য সচিব ফাহিম আহমদ, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফখরুল আহমদ রেজা, সদস্য সচিব জাকির হোসেন প্রমুখ।