Search

বিশ্বনাথে মা হলেন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী, বাবা হয়নি কেউ!

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঘুরে বেড়ান হাট-বাজার আর রাস্তায় রাস্তায়। রাত্রি কাটে দোকানপাটের সম্মুখে। ক্ষুধা নিবারণ করেন কুড়িয়ে, চেয়েচিত্তে। বলতে পারেন না নিজের নাম কিংবা পরিচয় কিছুই। সিলেটের বিশ্বনাথে এমনই চল্লিশ বছর বয়সের এক মাসনিক ভারসাম্যহীন নারী জন্ম দিয়েছেন ফুটফুটে সুন্দর এক কন্যা সন্তান। কিন্তু নবজাতকের বাবার পরিচয়ে এগিয়ে আসেনি কেউ।

আজ বৃহষ্পতিবার (১ মে) সকালে বিশ্বনাথ নতুনবাজারের যাত্রী ছাউনিতে তিনি সন্তান প্রসব করেন। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় স্থানীয় প্রশাসন।

জানা গেছে, আজ সকালে যাত্রী চাউনিতে প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী। বিষয়টি দেখে, অপর একজন মহিলাকে ডেকে আনেন স্থানীয় এক ট্রাক চালক। এসময় সহায়তার জন্য আসা কমরুন বেগম নামের একজন মহিলা একজন ধাত্রী ডেকে এনে যাত্রী ছাউনিতেই বাচ্চা প্রসব করান। পরে, তিনি বাচ্চাসহ ওই নারীকে থানায় নিয়ে যান। থানা পুলিশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তাদের সমন্বয়ে মা ও নবজাতককে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

মা-মেয়ে শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়ায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে মা-মেয়েকে কমরুন বেগমের জিম্মায়ই রাখেন সমাজসেবা কর্মকর্তা। মা কন্যাসন্তানটির প্রতি বেখবর। অক্ষম দুগ্ধদানেও। তাই কমরুন বেগমের জনৈক প্রতিবেশী এক মা নবজাতকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন।

এদিকে, শিশুটির ভবিষ্যত নিরাপত্তায় নিঃসন্তান দম্পতিকে কন্যা শিশুটি দত্তক দিতে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনন্দা রায়। তাতে বলা হয়, অভিভাবকত্ব গ্রহণ করতে চাইলে প্রয়োজনীয় তথ্যাদিসহ আবেদন করতে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, ‘মা-মেয়ে সুস্থ আছেন। আপাতত তাদের সহায়তাকারী ওই মহিলার জিম্মায় রাখা হয়েছে। জিম্মাদার যোগ্য কাউকে না পেলে উপজেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনন্দা রায় বলেন, ‘ইতিমধ্যে শিশুটিকে দত্তক নিতে একাধিক আবেদন এসেছে। আমরা যাচাইবাচাই করবো। শিশুটির সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষা না হলে আমরা তাকে সিলেট সরকারি ‘শিশু নিবাসে’ হস্তান্তর করব’।

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত