Search

বিশ্বনাথে প্রবাসী আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে বৃদ্ধা ভাবীর জায়গা দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা কাউছার আলীর বিরুদ্ধে জমি দখলের পায়তারা, আদালতের আদেশ অমান্য করে মানুষ চলাচলের সড়ক কর্তন ও বসতঘরের একাংশ দখল করে দেয়াল নির্মাণ করার অভিযোগ করেছেন তার বয়োবৃদ্ধা ভাবী। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) উপজেলার বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের হিমিদপুর গ্রামে প্রয়াত অ্যাডভোকেট আইয়ুব আলীর বাড়িতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত বৃদ্ধা আছিয়া আইয়ুব মিনা ওই অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা কাউছার আলী ও তার স্ত্রী জয়রুন ওরফে জনতা বেগম আমার স্বামীর পৈতৃক অংশ দখলের জন্য পায়তারা করে আসছেন। এর অংশ হিসেবে গত ১৪ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তারা বহিরাগতদের দিয়ে জোরপূর্বক আমার স্বামীর নির্মিত বসতঘরের পশ্চিম অংশ অবৈধভাবে দখল করে দেয়াল নির্মাণ করেছেন এবং প্রকাশ্য দিবালোকে একটি সড়ক কর্তন করে সেখানেও দেয়াল নির্মাণ করে মানুষ চলাচলের সড়ক বন্ধ করে দিয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কাউছার আলী কাছে বসতঘরের অংশে দেয়াল নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হুমকি দিয়ে বলেন আমি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুমিন মামুনের মাধ্যমে ওই সম্পত্তি দখলের জন্য প্রশাসন ও নেতাদের সঙ্গে ২০ লাখ টাকায় চুক্তি করেছি। এভাবে হুমকি দেওয়ার কিছু সময় পর সেখানে আব্দুল মুমিন মামুন উপস্থিত হন এবং তিনি আমার স্বামী-সন্তানের অসংখ্য স্মৃতি বিজরিত বসতঘরের পশ্চিম অংশ দখল করে দেয়াল নির্মাণ করেন. বিষয়টি আমার বড় মেয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফাহমিনা নূর লিপিকে জানালে সে উপজেলা বিএনপির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) গৌছ আলীকে বিষয়টি অবহিত করে। তিনি লিপির ভাসুরের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি আপোষে মিমাংসা করার জন্য বিগত ১৭ ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে আব্দুল মুমিন মামুনের বাড়িতে একটি বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করেন। কিন্তু পরদিন বিকেলে কাউছার বৈঠকে না বসার সিদ্ধান্ত জানান। এর আগে গত ৩ ও ৫ ডিসেম্বর এই বিষয়টি আপোষে মিমাংশা করার জন্য এলাকার মুরব্বী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ নূর মিয়া এবং উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুমিন মামুনের মধ্যস্থতায় দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।’

আছিয়া আইয়ুব মিনা আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর রাতে কাউছার তার ব্যবহৃত ০১৭২৮-২৫২৯৭৪ মোবাইল নাম্বার থেকে আমার দু’তলার ভাড়াটিয়া এমদাদুল হকের ০১৭১১-৯১২০৭৮ মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে রুম খালি করার এবং আমার বড় মেয়ে লিপিকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় কাউছার আলী ও জয়রুন উরফে জনতা বেগমের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।’

এদিকে, সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা কাউছার আলী। তিনি বলেন, ‘কাগজ অনুযায়ী জায়গাটি আমার মালিকানাধীন। তাই আমি সেখানে দেয়াল নির্মাণ করেছি। এ ছাড়া আমার কাছে এ সংক্রান্ত সকল বৈধ কাগজপত্র রয়েছে।’

বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুমিন মামুন বলেন, ‘ঘটনার দিন এলাকার একজন মুরব্বী জানান সেখানে সমস্যা হচ্ছে। আমি যেন সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। এরই প্রেক্ষিতে আমি সেখানে যাই এবং উভয়পক্ষকে সমঝোতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করি। কিন্তু পারিনি। তাই, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য থানা পুলিশের সহযোগিতা নিই। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উভয় পক্ষকে মিলিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ বিষয়ে আমাকে কোনো টাকা দেওয়া হয়েছে কিনা কিংবা আমার মাধ্যমে কোনো চুক্তি হয়েছে কিনা-তা একমাত্র কাউছার আলীই ভালো বলতে পারবেন।’

বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুবেল মিয়া বলেন, ‘আছিয়া আইয়ুব মিনার দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত