Search

লিবিয়ার বন্দীদশা থেকে বিশ্বনাথের রবিউলের আকুতি, ‘ব্যারিস্টার সুমন ভাই আমাদের বাঁচান’!

বিশ্বনাথটুডে ডেস্ক :: ‘বাবা আমি রবিউল। আমি ত্রিপুলি মাতার জেলে আছি। আমার সাথে আরো ৬০জন বাংলাদেশি। সবাই অনেক কষ্টে আছি। এখানে বেশিদিন থাকলে এমনি মরে যাব। এখান থেকে আমাদের দেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করো। এখান থেকে আমাদের দেশে নিয়ে যেতে পারবে চুনারুঘাটের এমপি ব্যারিষ্টার সুমন ভাই। যত তাড়াতাড়ি পারো সুমন ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ কর। সুমন ভাই যদি চায় আমাদের ৬০টা প্রাণ বাঁচাতে পারে। যত তাড়াতাড়ি পারো সুমন ভাইয়ের সাথে কথা বলবা। আর তা না হলে পুলিশ আমাদেরকে মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে দিবে। সুমন ভাই আপনি আমাদের বাঁচান। আপনি ছাড়া আমাদের আর কোন ব্যক্তি নাই। আপনি আমাদের শেষ ভরসা।’ লিবিয়ার বন্দীদশা থেকে পিতার কাছে এ রকম একটি চিরকুট পাঠিয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথের যুবক মো. রবিউল ইসলাম (২৩)। তিনি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কারিকোনা গ্রামের মো. সিরাজুল হকের ছেলে। আর রবিউল চিরকুটে ব্যারিস্টার সুমন ভাই নামে যার সাহায্য চেয়েছেন তিনি হলেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই বিমান যোগে দুবাই যান রবিউল। সেখানে লিবিয়ার অধিবাসী জনৈক আবদুর রহমানের সাথে পরিচয় হয় তার। এরপর গত ১৫ আগস্ট আবদুর রহমান ভাল বেতনের চাকুরীর আশ্বাস দিয়ে তাকে লিবিয়ায় নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে ৬ মাস চাকুরীও করেন রবিউল। পরে, লিবিয়া থেকে ইউরোপে যেতে চাইলে আহসান খান নামের বাংলাদেশি এক দালালের হাতে রবিউলকে তুলে দেন আবদুর রহমান। আহসান রবিউলের কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন এবং টাকা না পেলে তাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন। এই খবর পরিবারের কাছে পৌঁছলে ছেলেকে বাচাঁনোর জন্য রবিউলের মা নাছিমা বেগম ২ লাখ টাকা সেখানে পাঠান। তবে, এই টাকা পেয়েও আহসান রবিউলকে মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেন।

গত ১২জুন লিবিয়ার বেলকাজি হতে রবিউলসহ ৬০ বাংলাদেশিকে লিবিয়ার রাজধানি ত্রিপলি মাতার জেলে পাঠানো হয়। সেখানে চরম নির্যাতনের শিকার হন রবিউল। মাস দেড়েক পূর্বে তিনি +২৭৬২১৪০৩৬৬২ নাম্বার থেকে তার মায়ের ইমু নাম্বারে একটি চিরকুটের ছবি তুলে পাঠান। এরপর রবিউলের সাথে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি পরিবারের। এখন সে বেঁচে আছে কি না, কেউ বলতে পারছেন না।

ছেলে রবিউলকে লিবিয়ার জেল থেকে মুক্ত করতে নাছিমা বেগম সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন এমপির নিকট আবেদন করেন। ড. মোমেন আবেদনটি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর বরাবরে প্রেরণ করেন। গত ৪ জুলাই প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বন্দী রবিউলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে লিবিয়া দূতাবাসে চিঠি পাঠায়।

এদিকে, শনিবার (১৩ জুলাই) রাতে রবিউলের মা নাছিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, ‘আমার ছেলেকে লিবিয়ার জেল থেকে উদ্ধার করতে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্যারিস্টার সুমন সাহেবের সহায়তা কামনা করছি। রবিউলসহ জেলে বন্দী থাকাদের জরুরী ভিত্তিতে উদ্ধার না করলে তাদের করুণ পরিণতি ঘটতে পারে।’

তবে, ব্যারিস্টার সুমনের সাথে কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি বলে জানিয়েছে রবিউলের পরিবার।

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত