আব্বাস হোসেন ইমরান :: সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের হরিকলস গ্রামের আল-এমদাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি দূর থেকে দেখলে বুঝাই যায় না সেটা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। কাছে গেলেই তবে চোখে পড়ে ঝুঁকির নানা চিত্র। আর এমন ঝুঁকিতে থাকা ভবনটিতেই নিয়মিত চলছে পাঠদান। প্রতিনিয়ত ভবন ভেঙ্গে পড়ার আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে। এ অবস্থায় শঙ্কিত অভিভাবক এবং এলাকাবাসিও।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আল-এমদাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৭০ জন। তাদেরকে পাঠদানের জন্যে রয়েছেন ৫ জন শিক্ষক। ২০০১ সালে বিদ্যালয়টির নতুন পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। বাস্তবায়ন করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরে ২০০২ সালে ভবনটি হস্তান্তর করা হয়। তবে, নি¤œমানের কাজ হওয়ায় ২১ বছর যেতে না যেতেই ভবনের অনেক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন কক্ষসহ ভেতরে বাহিরে পলেস্তারাও খসে পড়ছে। মরিচা ধরা লোহার রডও বের হয়ে আসছে। বিশেষ করে, বৃষ্টির সময় ভবনের ছাদ চুইয়ে চারদিকের দেয়াল দিয়ে পানি পড়ে। অবশ্য ঝুকিপূর্ণ ভবনের পাশেই দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনশেডের আধাপাকা ঘর রয়েছে। সেখানে শিশু শ্রেণি ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়।
সরেজমিন আল-এমদাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের অফিস কক্ষসহ সবকটি কক্ষেরই ভেতরের চেহারা একেবারেই বিবর্ণ। সবগুলো দেয়ালেই পানি চুইয়ে পড়ার চিহ্ন দৃশ্যমান। অনেক স্থানে ফাটল ধরেছে। কোথাও পলেস্তারা খসে পড়েছে। এরমধ্যে একটি স্থানে দেখা গেল, পলেস্তারা খসে গিয়ে রড বের হয়ে রয়েছে। সেই রডটিও মরিচা ধরা।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, তাদেরকে ভয়ের ভেতর দিয়েই ক্লাস করতে হয়। সরকারের কাছে তাদের দাবি-দ্রুত একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার।
আল-এমদাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বিশ^নাথ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. গৌছ আলী জানান, ‘বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন স্থানের ফাটল, পলেস্তারা খসে পড়া, বৃষ্টির সময় ছাদ চুইয়ে পানি পড়া এবং পলেস্তারা খসে পড়া একটি স্থানের মরিচা ধরা রড দেখলেই যে কেউ সহজে অনুমান করতে পারবেন ভবনটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। কখন ভেঙ্গে পড়ে-সবসময়ই সেই আতঙ্কে থাকতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত অভিভাবকেরাও। প্রায় সাত আট বছর ধরে নতুন ভবনের জন্যে বারবার আবেদন করেও কোনো সমাধান পাইনি। একবার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরেও আবেদন করেছি। বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ হলে নিরাপদ পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার মান আরও বৃদ্ধি পাবে।’
বিশ্বনাথ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আল-এমদাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি আসলেই ঝুকিপূর্ণ। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নতুন ভবনের জন্যে আমাদের কাছে আবেদন জানালে আমরা সেটা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠাবো।’