Search

পৌর মেয়র মুহিবকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান তার ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে ধর্মদা এলাকায় অবস্থিত জাগরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রতিষ্ঠাকালিন সভাপতি তিনি নিজেই বলে যে দাবি করেছেন, সেটা প্রমাণ করার জন্যে তাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসি। সেই সাথে তিনি যদি তিনি তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে তাকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসির কাছে ক্ষমা চেয়ে ওই ভিডিওটি তার ফেসবুক থেকে মুছে ফেলারও আহ্বান জানান তারা।

আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ‘জাগরণ উচ্চ বিদ্যালয় নিয়ে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্ভট বক্তব্যের প্রতিবাদে আয়োজিত সভা’য় বক্তারা তার প্রতি এমন আহ্বান জানান। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ ফরিদ আহমদের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠানটির হলরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।


বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য সাহিদুল ইসলাম সাহিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামান আসাদ ও জাগরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমদ রহিম।


বক্তব্যে তারা উল্লেখ করেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান হঠাৎ করে জাগরণ উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে একটি ভিডিও ধারণ করে তার ফেসবুকক পেজে পোস্ট করেন। সেই ভিডিওতে তিনি মিথ্যা ও উদ্ভট তথ্য দিয়ে ১৯৮৫ সালে নিজে ওই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং প্রতিষ্ঠাকালিন সভাপতি ছিলেন বলে দাবি করেন। তিনি আরও দাবি করেন, তার জীবদ্দশায় তারই উন্নয়ন ছিনতাই করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি তার ভিডিওতে বলেন, অ্যাডভোকেট শাহ ফারুক আহমদ তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমার জীবন আমার কথা’তে নাকি লিখেছেন, তিনি (শাহ ফারুক) ও তার পরিবার এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। অথচ, সেই গ্রন্থের কোথাও তিনি ওই কথা লিখেননি। তিনি লিখাতে শুধু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় এলাকাবাসির অবদানের সাথে তার এবং তার পরিবারের অবদানে কথা তুলে ধরেছে। শুধু তাই নয়, পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান ওই এলাকাকে শিক্ষিত মিথ্যুকের এলাকা বলে গালাগাল করে বিদ্যালয়ের ভূমিদাতার নাম ফলককে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় মন্দিরের সাথে তুলনা করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ১৯৮৯ সালের ৭ জুন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে (স্মারক নাম্বার ২৪৬/৬) ধর্মদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শাহ সোনাফর আলীর সভাপতিত্বে ১৮ জুন ধর্মদা, ইসলামপুর, মোহাম্মদপুর, সাধুগ্রাম, ছায়ানিশি, শ্বাসরাম, দন্ডপানিপুর, আহমদনগর, নরসিংপুর, ঝাজর, কুতুবপুর, কালিরগাঁও, এবদালপুর, হিমিদপুর, ও রশিদপুর গ্রামসমূহের বয়োজ্যেষ্ঠদের নিয়ে একটি সাধারণ সভার মধ্যদিয়ে প্রথম বিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। পরে ৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত এক বর্ধিত সভায় এলাকার ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে
৩৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১লা সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত আরেকটি সভায় সকলের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়, ধর্মদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি অব্যবহৃত কক্ষকে ব্যবহার উপযোগি করে সে কক্ষেই পাঠদানের মধ্যদিয়েই যাত্রা শুরু হবে জাগরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্যে যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়, তার আহ্বায়ক ছিলেন প্রয়াত শাহ তফসিন আলী লেচু মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন মুন্সিফুর রহমান ও মো. শহিদ আলী। সদস্য ছিলেন তজম্মুল আলী, শাহ নেছার আলী, অ্যাডভোকেট মুদাব্বির আলী মানিক মিয়াসহ ২০জন গ্রামবাসি। ১৯৯০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় সকলের মতের ভিত্তিতে আহ্বায়ক কমিটির ২০ সদস্য থেকে তজম্মুল আলীকে চেয়ারম্যান ও শাহ তফসিন আলী লেচু মিয়াকে সদস্য সচিব করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির কাজে গতি আনতে ১৯৯১ সালের ১২ ডিসেম্বর সোনা মিয়াকে সভাপতি করে আরও ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। এই সাব কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর হিরন মিয়াকে সভাপতি করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। মূলতঃ এই কমিটির মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় জাগরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাকা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে এলাকাবাসির বাহিরে তৎকালিন উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে মুহিবুর রহমান ও তৎকালিন শিক্ষা কর্মকর্তা সহযোগিতা করেন, এটা এলাকাবাসি এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সবসময় স্বীকার করে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তিনি (মুহিবুর রহমান) এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।


বক্তারা আরও বলেন, পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানে ওই ভিডিওতে ‘আমার জীবন আমার কথা’ গ্রন্থের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে একই এলাকার মিজানুর রহমান সেলিম আপত্তিকর ভাষায় শাহ ফারুক আহমদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আক্রমণ করে বলেছেন। যা কোনো সুস্থ মস্তিস্কের মানুষের কাজ হতে পারে না। এছাড়াও, মিজানুর রহমান সেলিম মিথ্যা তথ্য দিয়ে বলেছেন, শাহ আজমত আলীকে
(রহঃ) নাকি শাহ মঞ্জুর আলী থাকার জন্যে আশ্রয় দিয়েছিলেন। অথচ প্রকৃত সত্য হচ্ছে, শাহ আজমত আলীর (রহঃ) যখন আগমন ঘটে, তখন শাহ মঞ্জুর আলীর জন্মই হয়নি। সেলিম যখন ্ওই আপত্তিকর ও মিথ্যা কথা বলছিলেন, সেই সময় তাকে থামিয়ে না দিয়ে একই এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ আবদুল গফ্ফার উমরা মিয়া আরও বিভিন্ন বিষয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন। মেয়রের কথাবার্তার সময়ও তিনি সেগুলো শতভাগ সত্য বলে সম্মতি জানিয়ে তোষামোদকারি চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। আবদুল গফ্ফার উমরা মিয়া যদি সঠিক পথে চলতেন, তাহলে তার স্থান আজ অনেক উপরে থাকত।


প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাজী নোয়াব আলী, হাজী মাসুক মিয়া, গোলাম রব্বানী, ফখর উদ্দিন, আবদুল জলিল হিরন, জামাল আহমদ, সুজন মেম্বার, ইসমাঈল আলী, আবদুল মান্নান রিপন, নাজিম উদ্দিন রাহিন মেম্বার, তানভীর আহমদ মেম্বার, নেছার মিয়া, জুবেল মিয়া, নূর আলী, ফারুক মিয়া, মনির মিয়া, রুহেল আহমদ, ফারুক মিয়া, ফেরদৌস মিয়া, আজাদ মিয়া, ফরিদ মিয়া, সফিক মিয়া, আবদুস সামাদ, গৌছ আলী, আবুল কাশেম, আফজাল আহমদ সায়েম, শাহ মুহিত, শাহ রিমু, শাহ সাইদুল ইসলাম সুজা, শাহ রুপন, শাহ অপু, শাহ ইফতেখারুল ইসলাম রাজু, মুজিবুর রহমান মঞ্জু, তামিম আহমদ, আতিক আহমদ, সুশীল দত্ত মন্ডল, হাবিবুর রহমান, ফজর আলী, আখলাছ আলী, আবদুল মালিক, মফিজ আলী, রশিদুর রহমান ফারুক, সফিক আহমদ, নূর আলী, মনির আহমদ, সোনাফর আলী, শরিফুল হক, শাহ বুরহান আহমদ রুবেল, শাহ আতিক আহমদ, আবদুল মুকিদ, জিবান আহমদ, জাকির মিয়া, ইমন মিয়া, সাহেদ আহমদ রুহেল, ফাহিম আহমদ, মারজান আহমদ, শামিম মিয়া, অনি আহমদ, মাহিন আহমদ, শাহজাহান, জুবায়ের আহমদ, তায়েফ আহমদ প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত