অর্থপাচারসহ দুর্নীতি প্রতিরোধে কী কী নতুন কৌশল গ্রহণ করা যায় তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমনবিষয়ক সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউের নেতৃত্ব একটি টিম রোববার বিকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মো. মাহবুব হোসেনসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠক শেষে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন, রিচার্ড নেফিউর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুদক প্রধান কার্যালয়ে আসেন, তারা আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। রিচার্ড নেফিউর আগমন ও তাদের সঙ্গে বৈঠক নির্বাচনের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং এ জাতীয় কোনো আলোচনা হয়নি।
প্রতিনিধি দলটি দুর্নীতি দমনে কোনো দিক নির্দেশনা দিয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মাহবুব হোসেন বলেন, প্রথমত ওনারা কিন্তু বাংলাদেশে দুর্নীতির বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য আসেননি। দ্বিতীয়ত দুর্নীতির বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করবে কি না সেই বিষয়েও আলোচনা হয়নি। তিনি বাংলাদেশেকে টার্গেট করেও আসেননি। ওনার দায়িত্ব পৃথিবীতে যে দেশগুলো আছে সেখানে দুর্নীতির তথ্য আদান প্রদান নিয়ে কাজ করা।
দেশের বিপুল অর্থপাচার হয়ে গেছে সেগুলো ফিরে পাওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, এগুলো আলোচনার বিষয়ই ছিল না। আজকে প্রাথমিকভাবে দেখা করলেন এবং তারা একটা ধারণা নিলেন। পরে ওনারা আগ্রহ প্রকাশ করলে তখন কোন কোন ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাওয়া যায় সেটা আলোচনা হতে পারে।
দুদক সচিব বলেন, তারা মূলত এসেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন কীভাবে কাজ করে, এখানে আইন বিধি-বিধান সম্পর্কে তার ধারণা নিয়েছেন। আপনারা জানেন দুর্নীতি এখন আর একটি দেশের সমস্যা নয় এটি গ্লোবাল ইস্যু। বৈশ্বিকভাবে কীভাবে তথ্য আদান-প্রধান করা যায় সে বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তার যে দায়িত্ব পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তিনি গিয়ে থাকেন এরই ধারাবাহিকতায় এ সফর। এর পর তিনি ভারতে জি-২০-তে যাবেন।
মার্কিন এই প্রতিনিধির কাছে অর্থপাচারে তথ্য প্রদানে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, এখানে দুর্নীতি দূর করা ক্ষেত্রে পারষ্পরিক সহযোগিতা এবাং কীভাবে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়, এমএলএআর, এসেট রিকভারি আরও সহজ কী করে হতে পারে, পারস্পরিক সহযোগিতা কীভাবে পাওয়া যেতে পারে সেসব বিষয়ে কথা হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে পরবর্তীতে আরও আলোচনা হতে পারে।
এদিন এস আলম গ্রুপের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে হাইকোর্ট থেকে রায় এসেছে এ বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করবে কি না জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, আদালত থেকে যদি কোনো বিষয় নির্দেশনা আসে সেটি অবশ্যই কমিশন থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি দলটি তিন দিনের এই সফরে দুদক ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, দুর্নীতি দমন নিয়ে কাজ করে এমন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। রিচার্ড নেফিউ ছাড়াও বৈঠকে অংশ নেন প্রতিনিধি দলে দুই সদস্য, দর্নীতি দমন বিশ্লেষক ডিল্যান এইকেনস ও ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা ম্যাক্স মার্টিন।
বৈঠকে দুদক সচিব ছাড়াও কমিশনরে পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন কমিশনের মহাপরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন, আক্তার হোসেন ও পরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাহিদ।